আমার বন্ধু নাহিদ
২০০৬ সালের প্রথম দিকের ঘটনা। কথা কাটাকাটি দিয়ে আমাদের পরিচয়।
তারপর বন্ধুত্ব শুরু। একসাথে স্কুল পালানো, স্কুল বদল। তখন থেকেই দুজন দুজনের পরিপূরক। স্কুল শেষে আমি ঢাকাতে চলে আসি। নাহিদ ভর্তি হয় চৌগাছাতেই। তবে এমন কোনো দিন নেই যে আমাদের কথা হতো না। দুজনই ভার্সিটি কোচিং করি যশোরে। একসাথে। নাহিদ যশোরে থাকতো, সেই সুবাদে আমারো যশোরে থাকা শুরু। নাহিদ এমএম কলেজে ভর্তি হলো। আমি ঢাকাতে। ঢাকা থেকে যশোর গেলে নাহিদকে যশোরে দুদিন জ্বালিয়ে তারপর বাড়ি যেতাম। ওর অসুস্থতা, পরীক্ষা এত সব দেখার সময় হতো না আমার। এক বালিশে, এক কাঁথাতে রাত পার করা মানুষ আমরা। এখনো আমি ইদে দুপুরে আমার বাসাতে খাই না। বিগত ১২/১৪ বছরের মধ্যে ২/১ টা মিস হয়েছে। ইদের দিন দুপুর মানে আমি নাহিদের বাসাতে।
২০১৬ সালের আগস্টের ১৪ তারিখ। রাত ১১ টায় ভারত থেকে ব্যাক করে ঝড়ের কবলে আমি তখন পুলেরহাট। এমএম কলেজ দক্ষিণগেটের সামনের তিন ফুট পানি মাড়িয়ে নাহিদ ই আমাকে আনতে গিয়েছিল।
আমার বিয়েতে এক দিনের নোটিশে নাহিদ হাজির।
আজ পর্যন্ত আমার অর্জনের পেছনে যে বন্ধুর অবদান সবচে বেশি সেটা নাহিদ। আমি ভেঙে পড়লে এই মানুষটা ই আমাকে সান্ত্বনা দেয়, সাহস দেয়। আমার সবচে বিশ্বাসী এই মানুষটাকে খুব ভালোবাসি আমি। প্রথম শ্রেণীর প্রকাশনাতে আমার চুক্তিপত্রে আমার নমিনি হিসেবে যে তিনজনের নাম, নাহিদ তাদের একজন। আমার অবর্তমানে প্রকাশনা সম্পর্কিত আমার সবকিছু তার হাতে তুলে দিয়েছি। তবে এই মানুষটার মুখে কখনো নিজের প্রশংসা শুনলাম না। তার কাছে আমি যেন কিছুই না। কারণ সে আমার শূণ্যাবস্থার বন্ধু।
সবার জীবনে যদি একজন নাহিদ থাকে, তবে শাহরিয়ার সোহাগ হওয়া তার জন্য খুব সহজ।
No comments