কিছু গল্পের নাম থাকে না
কিছু গল্পের নাম থাকে না
কোয়ারেন্টাইনের এই সময় সে একা এই বাসাতে ছিল। তার রুমমেট, যাদের সাথে সাবলেট থাকে, এমনকি পুরো বিল্ডিং এ কেউ নেই। দারোয়ানও ছুটিতে। বাড়ির মালিক তার অন্য একটা বাড়িতে থাকেন। এই বাড়ির দারোয়ান জামাল মিয়া ই পুরো বাড়ি দেখাশোনা করেন। তবে এই ছুটিতে সেও তার গ্রামের বাড়ি বরিশাল চলে গেছে পরিবারের সাথে কিছুদিন বেশি থাকার আশায়। তার রুমমেট যে ঢাকাতে ছিল না সেটা এরই মধে নিশ্চিত হতে পেরেছে জামশেদ।
রাতের জন্য রান্না করা তরকারিটা তখনো হালকা গরম ছিল। ঢেকে রাখা তরকারিটা শুকে দেখলো জামশেদ। তরকারি ঠিকই আছে। সিম পটলের তরকারিতে সিদ্ধ ডিম ছিল দুইটা। এই বন্দি সময়ে সে একাই রান্না করে খেত। বাসা থেকে বেরই হত না। ভাতের পরিমাণ একজনের জন্য স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশি। তবে তরকারি ছিল দুজনের খাওয়ার মত। হতে পারে সে আরেকবেলার জন্য তরকারি রান্না করে রেখোছে। তাহলে ডিম দুইটা সিদ্ধ করার কারণ কি? তাহলে কি বাসাতে কেউ এসেছিল! এসব প্রশ্নগুলো মেলানোর চেষ্টা করছে জামশেদ রহমান।
রূপনের বিছানাটা অগোছালো। কাঁথাটা ভাঁজ করা নেই। গিটারটা ব্যাগ থেকে বের করে বিছানাতেই ফেলে রাখা। রুমে ঝুলে থাকা ক্যালেন্ডারে গতমাসের পৃষ্ঠা। মাস বদলে যাবার পরও পৃষ্ঠাটা বদলানো হয়নি। রুমের দুটো জানালার একটা বন্ধ ছিল। অন্য একটা জানালা খোলা ছিল। খোলা জানালা দিয়ে বিল্ডিং এর বাইরে খুব ভালো মতই দেখা যায়। বন্ধ জানালাতে পর্দা ভিড়ানো ছিল। টেবিলের নিচে রাখা বোয়মে বেশকিছু শুকনো খাবারও ছিল। বিস্কুট, টোস্ট। চানানাচুর, মুড়ি, প্যাকেট কফি এসব।
লেখা পড়ে মনে হচ্ছে শেষ সময়টাতে রূপন খুব মানসিক চাপে ছিল। এই চাপ তাকে জেদী করে তুলেছিল। নাকি মনের কষ্টগুলো লেখার আগেই আতোতায়ের আগমন? কথিত মুক্তির জন্য রূপনের এই আত্মহত্যা নাকি প্রতিবাদী লেখার জন্য পরিকল্পিত খুন??
No comments