সোহাগনামা || পর্ব - ১০
আমার ২০১২ সালের জন্মদিনে মিশু আমাকে একটা ঈদকার্ড
দিয়েছিল। আর শশী একটা ডায়েরী দিয়েছিল। কলেজের সামনে একটা ফাস্টফুডের ওরা সবাই
আমার কাছে আইসক্রিম খেতে চাইলো। আমি বরাবরই একটা চালাকি করতাম, নিজের চলার মত কিছু খুচরো টাকা পকেটে রেখে
মানিব্যাগে সবসময় একটা পাঁচশ টাকার নোট রাখতাম। যেন খুচরো নেই, এই অজুহাতে অন্য কোন বন্ধুকে দিয়ে বিল
দেওয়ানো যায়। এমন মিথ্যাতে মাস শেষে বেশ কিছু টাকা সেভ হতো। কিংবা বন্ধুদের সাথে
বাজে খরচটা হতো না। আমার বেশিরভাগ বিল রোমানন দিয়ে দিতো। ভাগ্যের যাঁতাকলে সেবার
জন্মদিনে তাদেরকে ট্রিট দিতে গিয়ে সেই পাঁচশ টাকা খরচ হল। তাতে অবশ্য একটা সুবিধা
হয়েছিল। তরকারি পরিবর্তে কিভাবে এক সপ্তাহ আলু ভর্তা আর ভাত খেয়ে এ শহরের টিকে
থাকা যায় সেই ট্রেনিং টা নিতে পেরেছিলাম খুব ভালোভাবেই।
কলেজ বন্ধুত্বের মধ্যে প্রথম বিয়ে হয় শশীর। ২০১২
ডিসেম্বরের একদম শেষ দিকে। সব বন্ধুরা মিলে গিফট দেওয়ার জন্য জনপ্রতি পাঁচশ টাকা
চাঁদা নির্ধারণ করা হল। এর আগে বহুবার মিথ্যে বলেছি বন্ধুদের কাছে। বন্ধুরা মিলে
ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান হলে আমি সবসময় সাথেই থাকতাম, তবে
শেষমেষ আমার অসুস্থ হবার অভিনয়ে আমি তাদের সাথে যেতাম না। টাকাটা পকেটেই থেকে যেত, যা দিয়ে আরও বেশ কয়েকটা দিন অনায়াসেই ডাল-ভাত খেয়ে থাকতে পারতাম। শশীর বিয়ে তে পাঁচশ
টাকা দিয়ে এক বেলা পেট ভরে খুব ভালো খাবার খেয়েছিলাম ঠিকই, কিন্তু পরবর্তী এক সপ্তাহ খাওয়ার কষ্ট করতে
হয়েছিল খুব।
No comments