পরিবর্তন || শাহরিয়ার সোহাগ
চলতি পথে হঠাৎ কখনো আমাদের দর্শন হবে ফুটপাতে।
তুমি বাচ্চাকে নিয়ে স্কুলে যাচ্ছো।
আর আমি কোর্ট পরে সাহেব হয়ে অফিস যাচ্ছি।
সকালে তোমার বাসার নাস্তা-
এখন আর পেটে পড়ে না।
তোমার হাতের চা খাওয়া হল না আর।
বাচ্চাকে নিয়ে তুমি খুব গোছালো বেশ।
অথচ এই মেয়ে একসময় অলসতায় বাঁধতো না কেশ।
শাড়িতে তোমায় বেশ মানাই,
এটা তো তখনো বলতাম।
তবে মা চরিত্রে তেমাকে দেখে-
কেমন জানি অনুভূতিশূন্য হয়ে গেছি আমি।
আমাকে ছাড়া থাকতে না পারা মেয়েটা-
আজ আমাকে ছাড়াই মা হয়েছে।
মধ্যবিত্তের ভাগ্য দেরিতে পরিবর্তন হয়।
তাই আজো বাসে আসা যাওয়া করি।
তোমার বড়লোক স্বামীর গাড়িটা আজ বের করো নি?
বাড়ি, গাড়ি, স্বামী, বাচ্চা আর দামী পোশাকে-
তুমি ভালো আছো তো?
আমাকে কি ঢেকে ফেলেছো বিদেশী মেকাপের নিচে?
সময়জ্ঞান না থাকা তোমার এই প্রমিক-
এখনো তোমার দেওয়া ঘড়ি পরে-
সময় মতই অফিস যায়।
পাংচুয়াল শব্দটা তো অফিসে আমার উপাধি।
তবে এই আমি সঠিক সময়ে-
তোমাকে অর্জন করে ব্যর্থ হয়েছি।
সাবধানে যাও। একা পার হতে পারবে তো?
নাকি আমি পার করে দেবো।
ভয় নেই। বাচ্চা যদি প্রশ্ন করে-
তাকে উত্তর দিও আমি তার মামা।
ওর মুখে বাবা ডাক শোনার ভাগ্য তো আমার না।
কখনো, আবার কখনো,
হয়ত আবার দেখা হবে।
আমি রোজ এ পথেই অফিস যায়।
প্রতিদিন সকাল আটটায় আমি-
এখনেই বাসের জন্য ওয়েট করি।
দাঁড়ানো অভ্যাস তো আগেও ছিল।
তোমার জন্য বাসস্টপেজে দাঁড়িয়ে থাকতাম।
বাদ দেও সেসব কথা।
অফিসের দেরি হয়ে যাচ্ছে।
সবাই আমাকে পাংচুয়াল বলে।
এই অর্জনটাতো ধরে রাখতে হবে।
শাহরিয়ার সোহাগ এর কাব্যগ্রন্থ আমার শহরে তোমার গল্প
শাহরিয়ার
সোহাগ এর কাব্যগ্রন্থ আবিদা
No comments